শক্তি

সপ্তম শ্রেণি (দাখিল) - বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ - কাজ, শক্তি, ক্ষমতা | | NCTB BOOK
1

শক্তি বলতে কী বোঝায় আমাদের সবার মধ্যে তার একটা ভাসাভাসা ধারণা আছে, কারণ আমরা কথাবার্তায় বিদ্যুৎশক্তি, তাপশক্তির কথা বলে থাকি। মধ্যে মধ্যে আমরা রাসায়নিক শক্তি বা নিউক্লিয়ার শক্তির কথাও শুনে থাকি। আলোকে শক্তি হিসেবে সেভাবে বলা না হলেও আমরা অনুমান করতে পারি, আলোও হচ্ছে এক ধরনের শক্তি। দৈনন্দিন কথাবার্তায় যে শক্তিটার কথা খুব বেশি বলা হয় না, কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানে অসংখ্যবার যে শক্তির কথা বলা হবে সেটা হচ্ছে গতিশক্তি! কাজেই আমাদের ধারণা হতে পারে প্রকৃতিতে বুঝি অনেক ধরনের শক্তি আছে, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, সব শক্তিই কিন্তু এক এবং আমরা শুধু এক ধরনের শক্তিকে অন্য ধরনের শক্তিতে রূপান্তর করি! তাহলে শক্তিটা কী?

সূর্যের মহাকর্ষ বলের আকর্ষণে পৃথিবী যখন তাকে ঘিরে বৃত্তাকারে ঘোরে তখন পৃথিবী বলের সমকোণে সরে যায় বলে কোনো কাজ করা হয় না!

শক্তি হচ্ছে কাজ করার ক্ষমতা! শুধু তা-ই না, যখন কোনো বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে কাজ করা হয়, তখন সেই বলটি আসলে বস্তুটির মধ্যে একটা শক্তি দিয়ে দেয়। তাই বস্তুটির মধ্যে যতটুকু কাজ করা হয়েছে, বস্তুটির মধ্যে ঠিক ততটুকু শক্তি সৃষ্টি হয় এবং যে বল প্রয়োগ করছে তার ঠিক সেই পরিমাণ শক্তি খরচ হয়ে যায়। সেজন্য শক্তির এককও কাজের এককের সমান, জুল। কাজেই একটা বস্তুকে বল প্রয়োগ করে খানিকটা দূরত্বে ঠেলে নেওয়ার পর তার ভেতর কখনো গতির কারণে গতিশক্তি তৈরি হয়, কখনো ঘর্ষণের কারণে তাপশক্তি সৃষ্টি হয়, কখনো অবস্থানের কারণে স্থিতি শক্তির সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ যেটুকু কাজ করা হয়েছে সেটি কখনো নষ্ট হয় না, কোনো না কোনোভাবে এক ধরনের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যায়।

সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবী যখন তাকে ঘিরে বৃত্তাকারে ঘোরে তখন যেহেতু কোনো কাজ করা হয় না, তাই সেখানে সূর্যের কোনো শক্তি খরচ হয় না, পৃথিবীরও কোনোও শক্তি বৃদ্ধি হয় না।

Content added By
Promotion